শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০২২

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও কিছু কথা

 


স্বাধীন ভারতের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি, তথা ভারতের পনেরো তম রাষ্ট্রপতি মাননীয়া দ্রৌপদী মুর্মুকে  আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।


 শুধু আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন নয়, দ্রৌপদী মুর্মু এই জয়ে গোটা ভারতের মানুষজন খুশি হয়েছেন। আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাষ্ট্রপতিকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে কয়েকটি পথসভা, মিছিল,পদযাত্রা বের হয়েছিল।আর হবেই না কেন?? এতো বছর পর আমাদের দেশের কোনো সরকার এই প্রথম আদিম জন জাতি গোষ্ঠী, আদিবাসী সম্প্রদায়ের কোনো মানুষকে দেশের প্রথম নাগরিক সন্মান দিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে বসলেন।


তিনি দেশের পনেরোতম রাষ্ট্রপতি হিসাবে কতটা সফল হবেন বা ব্যর্থ হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে ঐ যে বলে না, আজকের দিনটা কেমন যাবে তা সকালের সূর্যদোয়ের পরেই জানা যায়। 

এখন আসুন,আমরা খোলা মনে, আমাদের  নির্বাচিত নতুন রাষ্ট্রপতি মাননীয়া দ্রৌপদী মুর্মুর সেই সকালটা তথা অতীত ইতিহাস সম্পর্কে কিছু জানার চেষ্টা করি।


দ্রৌপদী মুর্মু ১৯৫৮ সালের ২০ জুন ওড়িশার ময়ুরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামের একটি সাঁওতালি উপজাতি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা এবং দাদা উভয়েই পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার অধীনে গ্রামের প্রধান ছিলেন।


দ্রৌপদী মুর্মু শ্যাম চরণ মুর্মুকে বিয়ে করেছিলেন। এই দম্পতির দুটি ছেলে ছিল যারা উভয়ই মারা গেছে এবং বর্তমানে একটি মেয়ে আছে।

তিনি ১৯৯৭ সালে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেন এবং রায়রঙ্গপুর নগর পঞ্চায়েতের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি ভারতীয় জনতা পার্টি তফসিলি উপজাতি মোর্চার জাতীয় সহ-সভাপতি হিসেবেও কাজ করেছেন।


উড়িষ্যা বিধান সভায় এক সময় মন্ত্রী ছিলেন এই দ্রৌপদী মুর্মু। সেই সময়  সরকারের মদতে আদিবাসী দের জোর করে জমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়।আদিবাসীরা একত্রিত হয়ে রুখে দাঁড়ায়, প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। তৎকালীন উড়িষ্যা সরকারের পুলিশ বাহিনী গুলি চালায়  । ফলে তিনজন আদিবাসী মারা যান। আদিবাসীরা জমি থেকে অন্যায় ভাবে বলপূর্বক উচ্ছেদ হয়।তবুও তিনি সরকারের একজন মন্ত্রী পদে বসে চুপচাপ থাকেন।পদত্যাগ তো দূরের কথা কোনো মৌখিক প্রতি বাদ ও করেননি।


 এছাড়াও  ঝাড়খন্ডে যখন বিজেপি সরকার তখন পাঁচ বছর রাজ্যপাল ছিলেন। এই রাজ্যপাল থাকা কালীন  ওই সেই সময় আদিবাসী দের স্বার্থ বিরোধী সমস্ত বিলে উনি সই করেন। মানুষ মিথ্যে কথা বলতে পারেন, কিন্তু ইতিহাস কখনও মিথ্যে কথা বলে নি। 


এখন অনেকেই আদিবাসী রাষ্ট্রপতি ,আদিবাসী রাষ্ট্রপতি বলে নৃত্য জুড়েছে তাদের ভালো করে জেনে রাখা ভালো যে, ঝাড়খন্ডে পাঁচ বছর রাজ্যপাল থাকলেও আদিবাসীদের জন্য তিনি কিছুই উন্নতি করেন নি। উপরন্তু চরম আদিবাসী বিরোধী হিসেবেই উনাকে দেখা গেছে।  আসলে নামেই মুর্মু বা আদিবাসী  কাজে মোটেই আদিবাসী নন।


©জামাল আনসারী

22/07/2022



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন