শনিবার, ১ আগস্ট, ২০২০

ষোড়শী মেয়েটা



দূর্গা নাম জপতে জপতে ষোড়শী  মেয়েটা,
ঘর থেকে মহানন্দে বেরিয়ে গেল।
গাজনের মেলা,পড়ন্ত বিকেল,
সূর্যের রামধনু রং যেন
ষোড়শীর অব্যক্ত  রূপের প্রকাশ। 

রাত্রির শেষ লগ্নে, অপেক্ষারত বাবা,মা
রাত্রির নীরবতা ভেঙে সূর্যোদয় হল,
তবুও মেয়েটি আর বাড়ি ফেরে নি।
হাজার হাজার লোকের লোকারণ্যে,
ষোড়শী মেয়েটা কোথায় হারিয়ে যায়।
পাড়া,প্রতিবেশীর ঘরে ঘরে,
তন্ন,তন্ন করে খানাতল্লাশীর পর-----
থানা,পুলিশ,প্রশাসন,সবাইকে জানানো হল।
কিন্তু মেয়েটির কোন সন্ধান নেই।

সপ্তাহ খানেক পর গ্রামের জঙ্গলেই
উদ্ধার হয়,ষোড়শীর পচাগলা দেহ।
মাছি ভন ভন করছে নিথর শরীরে।
পুলিশি ময়নাতদন্তের পরে জানা যায়,
কয়েকজন নর পিশাচ ফুলের মধু চুষে,
ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল,জঙ্গলে মেয়েটাকে।

সেদিন গোটা গ্রামে উনুন ধরে না,
চঞ্চল,গ্রামটা যেন বোবা,নিস্তব্ধ।
বর্বর,পৈশাচিক অত্যাচারের প্রতিবাদে,
বুদ্ধিজীবিরা রাজপথে একটাও মোমবাতি জ্বালায় নি সেদিন।
গরীব মেয়েটিকে কেই বা স্মরণ করে?
যতোই হোক না সে বুদ্ধিমতী মেয়ে।
বড়োলোকের বকাটে, মদমাতাল কেউ হলে,
সে কি আর কান্ড মশাই---
রাজপথে বুদ্ধজীবীরা মোমবাতি হাতে
টি,ভিতে চ্যানেলে চ্যানেলে ,বিচার চাই,বিচার--
তর্ক বিতর্কের ঝড়ে তুফান তোলে।
না,এই ষোড়শী মেয়েটার বিচার কেউ চাই নি।

মেয়েটির মা চোখের জল মুছে বলেছিল,
আমরা গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই।
আমরা সব সইতে পারি....
কিন্তু বিচারের নামে প্রহসন সইতে পারি না।
না,আমি আমার মেয়ের বিচার চাই না।
আমরা গরিব,বড়োলোকের হাতের পুতুল,
নায্য বিচার আমরা কখনোই পাই নি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন