শনিবার, ১ আগস্ট, ২০২০

অভাগী



হতভাগী মেয়েটির কেউ কোথাও নেই, 
সবাই গেছে যমালয়ে।
লোকে বলে বাপটা ছিল খুবই ভালো মানুষ, 
পাতলা,দুবলা খিনখিনে শরীর।
দোষের মধ্যে একটাই দোষ, 
সকাল থেকে হাড় ভাঙা খাটুনি, 
ক্লান্ত শরীরে টলতে টলতে প্রতিদিনেই ফিরত বাড়ি।

তবে একা কখনোই নয়, সাথে তার সাথী
হাতে মদের একটা বোতল।
প্রানপ্রিয় মদকে ভালবেসে তার বাপটা
যেই হৃদয়ে দিলো স্থান,
তারপর, তারপর কোন একদিন
হতভাগীর বাপটার চঞ্চল জীবনটা
মদের বোতলের মধ্যে আটকে গেল,
আর কোনদিনই সূর্যের আলো দেখল না ।

অভাগীর প্রস্ফুটিত ফুলের বয়স, 
সবেমাত্র একটি রঙীন বসন্ত গেছে কেটে।
মায়ের নরম কোলে জড়িয়ে বেড়ে উঠতেছিল,
একটু একটু স্নেহের পরশ পেয়ে।
কিন্তু হায়! বিধাতা সহিল না সুখ বেশিদিন।
হতভাগী মেয়েটিকে ঘরে কোনে ফেলে
জননী,যৌবনের স্রোতে গা ভাসিয়ে স্বপ্নরাজ্যে দিল পাড়ি।
হতভাগী চির অনাথ হল সেইদিন।

হতভাগী মেয়েটির এখন কেউ কোথাও নেই,
সবাই গেছে তাকে ছেড়ে অবহেলায় অনাদরে,
মাঝ সমুদ্রে জীবনতরী প্রবল ঝড়ে হাবুডুবু, 
সেই অভাগী তীরে উঠবে কেমন করে ?

ভয়ে তার বুক করে দুরুদুরু, 
প্রতিদিন জীবন সংগ্রাম হল শুরু।
পৃথিবী ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত,
মানুষের মানবিকতার লেশমাত্র নেই । 
আছে শুধু হিংসা, বিদ্বেষ, রক্তলোলুপ হিংস্র দৃষ্টি।
হতভাগী মেয়েটির কেউ নেই, 
হিংস্র পশুর মুখে অভগীকে ফেলে দিয়ে,
এই মানব সমাজ পেল কি মুক্তি ?
হায়! অভাগীর কেউ কোথাও নেই, 
কেউ কোথাও নেই,  কেউ নেই.....

15 / 06 / 2017

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন