শনিবার, ১ আগস্ট, ২০২০

ভদ্রলোকটি



চৈত্র ,বৈশাখের তীব্র দাবদাহের আগুনে পুড়ে ছাই মন,
    পেঠের আগুন জ্বলে দ্বিগুণ, 
              চোখে ভেসে উঠে সরষে ফুল ।
জ্বলে না শুধু একটি পোড়া হৃদয় ।
      শোভা বর্ধন করে অভুক্ত শরীর, 
                 কঙ্কালসার পাঁজরের পদ্মফুল।

সূর্যকে মাথায় ধরে, হাতে ভাঙা থালা , 
  অর্ধ নগ্ন শরীরে সেই হাজার বছরের পুরোনো,
          ময়লা, তৈলাক্ত ছেঁড়া জামা ।
কোটরগত চোখ দুটো মনে হয় একমাত্র জীবিত ,
  ছলছল নয়নে,মৃদু স্বরে ডাক দিয়ে যায়
     ও দাদা,  ও দিদি....
          একটি টাকা আমায় দাওনা ?

চলন্ত গাড়ির মতো সবাই চলে যায়, 
   পাশ কাটিয়ে, না দেখার ভান করে, 
            স্কুল,কলেজ, অফিস, আদালতে।
  কাজ - কর্ম সম্পাদন করে সকলেই যায় ফিরে ,
      ব্যস্ততম পৃথিবীর আপন আপন ঘরে ।

দুর্ঘটনায় দুই পা হারানো ভদ্রলোক টি
     প্রতিদিন বসেই থাকে, রাস্তার পাশে মাটি কামড়ে ,
তৈলাক্ত ছেঁড়া জামা, আর ভাঙা থালা ,
      ভালোবেসে, শুধু  যায় না তাকে ছেড়ে।

মাথার ঘাম মুছে ফেলে, ভদ্রলোক টি,
    আকাশের দিকে তাকিয়ে বিড় বিড় করে বলে, 
মানুষ আজ বড়ই স্বার্থপর, দয়ার নাই লেশ,
        আর কত দিন বুকের আগুন জ্বলবে ?
সভ্য সমাজের অমানবিক অত্যাচার, 
  নীরবে নিভৃতে সহ্য করে, আমি একদিন হবো নিঃশেষ ।



(আলোর দিশা,পত্রিকায় প্রকাশিত)


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন